• E-paper
  • English Version
  • রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৩১ পূর্বাহ্ন

×

নরসিংদী কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া দুই নারী জঙ্গী গ্রেফতার, ৩৩১ বন্দীর আত্মসমর্পন

  • প্রকাশিত সময় : বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই, ২০২৪
  • ২৪ পড়েছেন
ফাইল ছবি

পালিয়ে যাওয়া দুই নারী জঙ্গী গ্রেফতার# মাইক্রোবাসে করে পালিয়ে যায় বন্দীরা# ৩৩১ বন্দীর আত্মসমর্পন# সেনা প্রধানের পরিদর্শন

নরসিংদী প্রতিবেদক :  
নরসিংদী কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া দুজন নারী জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশ থেকে জানানো হয়েছে, শুক্রবার নরসিংদী কারাগারে হামলার পর যে আটশর বেশি বন্দি পালিয়ে যায়, তাদের মধ্যে কয়েকজন জঙ্গি ছিলেন। তাদের মধ্যে দুজন নারী জঙ্গিকে (ইসরাত জাহান ওরফে মৌসুমী মৌ ও খাদিজা পারভীন মেঘলা) গ্রেফতার করেছে ঢাকার পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটিটিসি)। এছাড়া পুলিশের হাতে আসা এক ভিডিও ফুটেজ থেকে দেখা যায় হামলার সময় বন্দীদের অনেকেই আগে থেকে রাখা ৫টি মাইক্রোবাসের করে পালিয়ে যায়। এ পর্যন্ত পালিয়ে যাওয়া বন্দীদের মধ্যে ৩৩১ জন বন্দী আত্মসমর্পন এবং ৩৯ টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।  নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নরসিংদী জেলা কারাগার থেকে বন্দি পলায়ন, অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুটের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে জেল সুপার আবুল কালাম আজাদ ও জেলার মো. কামরুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা ও সেবা বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পরিপত্র জারি করে তাদের বরখাস্ত করেছে।

এদিকে বুধবার দুপুর দেড়টায় জেলা কারাগার পরিদর্শনে আসেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি ২০ মিনিট সেখানে অবস্থান করে সড়ক পথে ফিরে যান।

যেভাবে পালান বন্দীরা : ঘটনার বর্ণনা দিয়ে একাধিক কারারক্ষী ও এলাকাবাসী জানান, শুক্রবার বিকেল সোয়া চারটার দিকে হামলাকারীরা মুহুর্মুহু ইটপাটকেল ছুড়তে ছুড়তে কারাগারের দুই দিকের ফটক ভেঙে ভেতরে ঢোকেন। এ সময় পেট্রলবোমা মারা হয়। কারাগারের ভেতরে নানা জায়গায় আগুন ধরে যায়। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন সেলে। হামলাকারীরা কারারক্ষীদের থেকে ছিনিয়ে নেওয়া চাবি দিয়ে বন্দীদের অনেকগুলো কক্ষের তালা খুলে দেন। কিছু কক্ষের তালা ভেঙে ফেলা হয়। চারপাশ ধোঁয়ায় ছেয়ে যায়। এ সময় হামলাকারীরা আসামি ছিনিয়ে নেন। এরপর একে একে ৮২৬ বন্দী পালিয়ে যান। এ সময় অস্ত্রাগার ও কারারক্ষীদের থেকে ৮৫টি অস্ত্র ও ৮ হাজার ১৫০টি গুলি লুট করা হয়। স্থাণীয়রা বলেন, হামলার সময় কারাগারের  নিকটবর্তী এলাকায় ৫টি মাইক্রোবাস নিয়ে অপেক্ষা ছিল দূর্বৃত্তরা। সেই বাহনে করে অনেক বন্দী পালিয়ে যায় এবং অনেকে অটোরিক্সা ও পায়ে হেঁটে পালিয়ে যায়। হামলার ঘটনায় সেদিকে রওনা হয় পুলিশ কিন্তু স্টেডিয়াম এলাকায় পৌঁছালে লুন্ঠিত অস্ত্র দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। প্রায় তিনঘন্টা ধরে চলে গুলাগুলি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, কারাগারে যাঁরা হামলা করেন, তাঁদের হাতে লাঠিসোঁটা, দেশি অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। তাঁদের হামলা প্রতিহত করার চেষ্টা করেন কারারক্ষীরা। তবে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। কারারক্ষীরা নিরাপদ অবস্থানে চলে যান।

কারাগার যেন ধ্বংসস্তূপ : কারাগারে বন্দীদের থাকার জায়গা, রান্নাঘর, কনডেমড সেল ও অফিস এখন আর আলাদা করে চেনার উপায় নেই। সবখানে পোড়া চিহ্ন, লন্ডভন্ড অবস্থা। দেখে মনে হয়, যুদ্ধক্ষেত্রের কোনো ধ্বংসস্তূপ। গত শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কারাগারে ঢুকে এমন চিত্র চোখে পড়ে। কারাগারে গিয়ে দেখা যায়, কারাগারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সাদাপোশাকে আছেন। কারাগারের অফিস, রান্নাঘর, বন্দীদের থাকার জায়গা, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের থাকার কনডেমড সেলসহ পুরো এলাকায় আগুনে পোড়ার দাগ। আশপাশের উৎসাহী লোকজন কারাগারের ভেতরে ঢুকে ঘুরে ঘুরে দেখছিলেন। কেউ কেউ কারাগারের বাগানের ফুল-ফল ছিঁড়ে বাড়ি নিয়ে গেছেন।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA